অনুগল্প
অনেক বছর আগে গ্রামে একজন বোকা পরিশ্রমী কৃষক বাস করতেন। কৃষকের সংসারে সব সময় ঝগড়া ঝামেলা লেগেই থাকতো, কোনো শান্তি ছিল না। কারণ তার বউ ছিল খুবই ঝগড়ুটে আর মুখরা টাইপের মহিলা। কৃষক বউয়ের যন্ত্রণায় কাতর কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারতে না। এভাবেই চলছিল তাদের দিন। একবার তিলের মৌসুমে কৃষক
তিল কাটতে যাবার সময় বউকে বললেন,
-"বউ মাঠে তিল পেকেছে আমি তিল কাটতে যাচ্ছি তুমি ঘর থেকে কাচিটা নিয়ে আসো"।
কৃষকের বউ হাসিমুখে কাচি বের করতে করতে বলল,
-"দেইখো বাপু তিল কাটতে গিয়ে যেনো আবার নাক কেটে ফেলো না। তখন আবার আমাকে দোষারোপ করবে"।
কৃষক বউয়ের কথা পাত্তা না দিয়ে মাঠে চলে আসলো। আকাশে অনেক মেঘে করেছে তাড়াতাড়ি তিল কেটে বাড়িতে ফিরতে হবে তাই কৃষক খুব তাড়াতাড়ি তিল কাটা শুরু করলেন কিন্তু মাঝখানে গিয়ে হঠাৎ উনার মনে হলো," বউ আমারে বললো কেনো তিল কাটতে গিয়ে আমার যেনো নাক না কাটে? নাক কোথায় আর কাচি কোথায়?" কথাগুলো ভেবে কৃষক বারবার নাকের সামনে কাচি ঘুরাতে থাকলো ঠিক তখনই বাধলো বিপত্তি। ধারালো কাচির আঘাতে কৃষকের নাকের ডগা ওমনি কেটে গেলো। কৃষক যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বাড়িতে ফিরে বউকে বেদম প্রহার করতে শুরু করলো। বললো,
-" তোর জন্যই আমার নাক কেটেছে আমিও তোর নাক কেটে নিবো।"
কৃষকের কথা শুনে বউটা ভীষন ভয় পেয়ে গেলো। কিভাবে এখন এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ভেবেই উনার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো আর উনি ছন্দে ছন্দে বললেন
-" নাক কাটলে উঠবে আলে আর ঝালে কিন্তু চুল কাটলে উঠবে না আর এজনমের কালে।
বউয়ের কথা শুনে কৃষক ভাবলো তাহলে ওর চুলটাই আমি কেটে দিবো। সারাজীবন নেড়া হয়ে থাকুক। কৃষক বুদ্ধি খাটিয়ে বউয়ের চুল কেটে দিলেন। কাটাশেষে কৃষকের বউ এবার গলা উচিয়ে বলল,
"আমি চললাম বাপের বাড়ি। কিছুদিন পর যখন চুল গজাবে তখন নতুন করে সংসার পাতবো আর তুমি সারাজীবন এরকমই থেকো।
সমাপ্ত
বোকা কৃষক
লাবণ্য ইয়াসমিন
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন। গল্পটা আমার মরহুম দাদিজানের থেকে শুনেছিলাম উনি প্রায় বলতেন।
