লেখিকা ঃ পুষ্পিতা হোসেন
গল্পের নাম ঃ
পারভানা 🥀
পর্বঃ১
-- তোহা আর আবির এর বিয়ে টা পারিবারিকভাবেই সম্পন্ন হয়।তোহা তার বড় বোনের কাছে বড় হয়েছে। তোহার বয়স ২২। এইচ এস সি দেওয়ার পর আর পড়াশোনা করা হয়নি। তোহার বারো বছর থাকতে তোহার বাবা মারা যায় সেই শোকে তোহার মাও দুই মাস পর মারা যান।তোহা খুব নরম মনের মানুষ আর খুবই মিশুক খুব সহজেই পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলতে পারে সে।বড় বোনের দায়িত্বে আর কত দিন থাকবে ভালো মন্দ বুঝ হয়েছে তার। কারণ বড় বোনের ও নিজের একটা সংসার আছে তাই তোহা তার বড় বোনের ইচ্ছে অনুযায়ী বিয়ে করে আবির কে। তোহার বিয়ের সমন্ধটি আসে তোহার বড় বোনের ৫ বছরের মেয়ে নামিরা কে স্কুলে নেওয়া আসা করত সে।যে স্কুলে নামিরা পড়ে সেই একই স্কুলে আবিরের ছোট বোন আশা ক্লাস সেভেনে পড়ে।মাঝে মাঝে আবিরের মা আশা কে নিতে আসার সময় তোহা কে দেখে পছন্দ করে ফেলে তার ছেলের বউ হিসেবে।তখন ঠিকানা জোগার করে তোহার বড় বোনের কাছে প্রস্তাব পাঠায় আবিরের পরিবার। আবির নাম করা একজন ব্যবসায়ী আর দেখতে শুন্তেও ভালো হওয়ায় তোহার ফ্যামিলির ও আপত্তি ছিল না তাই তোহার তেমন নিজ পছন্দ না থাকায় বিয়েতে কোন আপত্তি তার ও নেই।
অপরদিগে আবির আরও দেরি করে বিয়ে করতে চাচ্ছিল সুতরাং এই বিয়েতে অমত থাকলেও ধীরে ধীরে আবিরের অজানাতেই তোহার প্রতি ওর খুব অন্য রকম ভালোলাগা তৈরি হয়।রাতের ডিম লাইটের আলোয় তোহার ঘুমন্ত অবস্থায় মায়াবী চেহারা,টানা টান চোখ আর সিলিং ফ্যান এর বাতাসে তোহার উড়ন্ত চুল যেন আবিরের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। হুট করেই তোহার চোখ খুলে গেল আর আবির নজর লুকিয়ে মশার বাহানা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আবিরের পরিবর্তন হওয়া তোহার প্রতি দুর্বল হয়ে যাওয়া এর সবই তোহার চোখে পড়ছে। তার বেশ ভালোই লাগছে আবিরের চোখে তার প্রতি এরুপ প্রেম দেখে।মনে তার আনন্দের শেষ নেই।প্রায় রাতেই দুজন হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়াত শহরের অলি গলি।
যখনই তোহার বাবা - মার কথা মনে পড়ত বা কোন কারনে মন খারাপ থাকলে আবিরের বুকে মাথা রেখে ছাদে বসে আকাশের তাঁরা দেখত।ছাদের শীতল বাতাসে দুজনি জমে বরফ হয়ে যাবে এমন অবস্থা।ব্যস্ততার এই শহরে দুইবছর কেটে যায় তাদের সংসারী জীবনের। এরপর থেকে খুবই পরিবর্তন হওয়া শুরু করে তোহা।
হতাৎ একদিন রাত বাজে ৩ টা আবির ওয়াশ রুমের জন্য উঠতেই দেখে তোহা পাশে নেই।একি তোহা কই গেলো এত রাতে?
আবির ঃ তোহা , তোহা এই তোহা কই তুমি? কি ব্যাপার এত রাতে মেয়েটা গেল কই, রাতে বাজে ৩ টা। পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুজে ফেললাম। কি করি এখন? এক মিনিট ছাদে খুজা হয়নি!ওদিগ টা একবার দেখে আসি।
তারপর আবির ছাদে যেতেই দেখে.....
আবিরঃ তোহা তুমি এখানে কি করছ?
তোহা একদম নিশ্চুপ। পিছন থেকে বারবার আবির আওয়াজ দিচ্ছে কিন্তু সে যেন অন্য মনস্ক হয়ে আছে।
আবির এইবার তোহার সামনে যেতেই দেখে তোহা চুপ হয়ে আকাশের পানে চেয়ে আছে আর মুচকি হাসছে।আবির ঝাকি দিয়ে তোহা কে ধমক দেয়
আবিরঃ তোহা আমার দিগে তাকাও কি হয়েছে তোমার
তোহাঃ আ, আবির তুমি এভাবে কেন বকছ আমায়?তুমি তো আমাকে বললে ছাদে যাওয়ার কথা।
-চলো না তোহা, ছাদে যাই আজকে দুজন মিলে রাত টা আকাশ ভরা তারা দেখতে দেখতে পার করে দেব
আমার বুকে মাথা রেখে তুমি ঘুমাবে আর আমি তোমার এই মলিন হাতটি ধরে তোমার ঘুমন্ত চেহারাটি দেখব।
তোহার এইসকল কথা শুনে আবির তো হা হয়ে তালুয়ে আছে মনে মনে ভাবছে সে আবার কখন বলল এতকিছু।
আবিরঃ তোহা তুমি কি ঠিক আছ?Are you made Toha??
তুমি কি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সপ্ন দেখেছ নাকি হে!মজা করা শেষ তোমার? আমি ত ঘুমিয়ে ছিলাম ওয়াশ রুমের জন্য উঠেছিলাম আর দেখি তুমি পাশে নেই। দেখ তোহা চলো ঘুমাবা কাল সকালে বাকি কথা হবে অনেক রাত হয়েছে তার কি খবর আছে।।
তোহাঃশুনো না আমি সত্যি বলছি।
আবিরঃআচ্ছা ঠিকাছে, অনেক হয়েছে চলো আসো আমার হাত ধরো। আমার ত মাথায় আসছে না এই অন্ধকারে ছাদে উঠার সাহস পেলে কিভাবে উফ এমন মজা আর কখনই করবানা তোহা আমার পছন্দ না। তুমি জানো কতটা ভয় পেয়ে গেছি।
তোহাঃ I am Sorry!
#চলবে
(এই প্রথম গল্প পোস্ট করছি গ্রুপে আশা করি সবাই সাথে থাকবেন 😊গল্পে যেকোনো রকম ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমার চোখে দেখবেন।
ধন্যবাদ। )
